সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক মুক্তির যুদ্ধঃ চীনকে অনুকরণ করতে পারে বাংলাদেশ # ১৪৫

রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক মুক্তির যুদ্ধঃ চীনকে অনুকরণ করতে পারে বাংলাদেশ 
২০১৫ ’র ধাবমান বিশ্বে গণতান্ত্রিক চীন এক ঈর্ষণীয় উন্নতির পথে চলছে দ্রুততর গতিতে। অনুন্নয়ন আর ধর্মান্ধতার পঙ্কিলতার পথকে তারা অগ্রাহ্য করছে নানা অনুসঙ্গে। যদিও এই সেদিনও তাদের সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আফিম যুদ্ধ করতে হয়েছিল দীর্ঘতর। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে চমৎকার মিল পাওয়া যাবে চীনের ইতিহাসের দিকে চোখ ফেরালে। ১৮৪০ সালের দিকে চীনে ‘‘ছিং’’ শাসনামলে ৪০,০০০ পেটি আফিম নিয়ে নিয়ে ব্যবসা শুরু করে মার্কিন ও বৃটিশ ব্যবসায়ীরা। বহিরাগতরা নিজেদের সমর্থনে চীনা মুৎসুদ্দী সাব-এজেন্ট নিয়োগ করে। ফলে বহিরাগত ব্যবসায়ীদের আফিম ব্যবসার অনুমিত দেন চীনা ম্যান্ডারিন ‘‘ছিং’’ শাসকরা। সাম্রাজ্যবাদের জোয়ালে আটকে যায় চীনের মানুষ। ফলশ্রুতিতে চীনে ১ম আফিম যুদ্ধ লাগে বহিরাগত ও তাদের চীনা দোসরদের সঙ্গে। যুদ্ধশেষে কেবল মার্কিন ও বৃটিশ সমর্থক চীনা ছিং শাসক ‘ছিসানের’ সম্পদ পাওয়া যায় ১১০,০০০ আউন্স সোনা, ১৭০ লাখ আউন্স রূপা, আর ৪,২৭,০০০ একর ভূমি। চীনে আফিম ব্যবসা বন্ধ না করার পক্ষে বৃটিশ যুক্তি ছিল ‘‘এটা বৃটেনের শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ’’।
 
পশ্চিমা দেশগুলো একত্রে তাদের বদ-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখার জন্য চীনকে খন্ড বিখন্ড করে ও ক্রমাগত লুটপাট চালায়। বৃটেন, জার্মানী ও পর্তুগাল যথাক্রমে ১০০-বছরের জন্য চীনের হংকং, শানতোং, ডালিয়ান ও ম্যাকাও দ্বীপগুলো জোর করে ইজারা প্রদানে চীনকে বাধ্য করে ঐ সময়। ১৮৯৮ সনে ফ্রান্স চীনের ‘কুয়াংচৌওয়ান’ দখল করে। চীন ভাগবাটোয়ারায় ‘ইয়াংসি’ তথা তিববত বৃটেনের ভাগে পড়ে। জারশাসিত রাশিয়া দখল করে চীনের ‘মাঞ্চুরিয়া’ ও ‘মঙ্গোলিয়া’। এর ফলশ্রুতিতে ১৮৪০-৪২ সনে ১ম আফিম যুদ্ধ, ১৮৫৮-৬০-এ ঈঙ্গ-ফরাসী ২য় আফিম যুদ্ধ, ১৮৮৫ সনে চীন-ফ্রান্স যুদ্ধ, ১৮৯৪ সনে চীন-জাপান যুদ্ধে অংশ নেয় চীনারা। এই সময়ের চীনের ‘‘ছিং’’ শাসকরা নিজেদের রাজতন্ত্র টিকিয়ে রাখার জন্য বিদেশী প্রভুদের সঙ্গে অাঁতাত করে এবং বর্ণিত বিদেশীদের কাছে চীনা নাগরিকদের দাস হিসেবে বিক্রির জন্য তুলে দেয়। চীনা কৃষকদের বর্ণিত আক্রমনকারীরা ধরে মালয়শিয়া, হাওয়াই, আমেরিকা, ক্যানাডা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিভিন্ন দেশে চুিক্ততে বিক্রি করে। 

১৯৩৭-৪৫ সন পর্য চীনা সাধারণ মানুষ জাপানী সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে। এই দেশী বিদেশী সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ১ম ‘‘ইহোথুয়ান মশাল অভ্যুত্থান’’ শুরু করে চীনের কৃষক শ্রমিকরা। যুদ্ধকালীন চীনে অভূতপূর্ব বুদ্ধিবৃত্তির আন্দোলন শুরু হয়। কনফুসীয় নৈতিকতা ও পিতৃতান্ত্রিক পরিবার ব্যবস্থা তথা চীনা সামন্তবাদের সামাজিক ও দার্শনিক উপকাঠামোর বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা শুরু হয়, যাতে সাহিত্যিক রেনেসাঁ তথা সাধারণ মানুষের ‘‘মুখের কথ্য ভাষায়’’ সব কিছু লেখার তাগিদ প্রদান করা হয়। সামন্ত সমাজে অধিকারহীন নারীদের পতিতাবৃত্তি, পা-বাঁধার রীতি ও মেয়েদের বিয়েতে কেনাবেচা বন্ধ করা হয়। কিন্তু জাপানী সমর্থক চীনা ‘‘কুওমিনতাঙ’’ (চীনা রাজাকার) বাহিনী চীনাদের বিপক্ষে যুদ্ধ চালাতে থাকে। এ যুদ্ধে কোরীয়, ভিয়েতনামী, ইন্দোনেশীয় মুক্তিযোদ্ধারা, মার্কিন সাংবাদিক এডগার সেণা, মার্কিন লেখিকা লুই স্ট্রং ও এডনেস স্মেডলী, কানাডার ড. নরম্যান বেথুন, ভারতের ডাক্তার দ্বারকানাথ শামিত্মরাম প্রমুখ চীনাদের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিলেও, নিজ দেশের রাজাকার ‘‘কুওমিনতাঙ’’ চীনের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে দাঁড়ায় [ঠিক একাত্তরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মত!]। নানা ঘাত প্রতিঘাত শেষে মাও-সেতুং এর নেতৃত্বে চীনারা ১৯৪৬-৪৯ পর্যন্ত চূড়ান্ত মরণপণ যুদ্ধে নামে। 

জাপানী সমর্থনকারী চীনা রাজাকার ‘‘কুওমিনতাঙ’’-রা এই যুদ্ধকে ‘গৃহযুদ্ধ’ নাম দেয়, যেমন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে পাকিসত্মান ‘গৃহযুদ্ধ’ নাম দিয়েছিল। চীনাদের এ মুক্তির যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন চীনাদের সংগ্রামে সমর্থন দেয়, যেমনটি দিয়েছিল বাঙালিদের। চীনা ধনী সাম্রাজ্যবাদের সমর্থক আমলারা যথারীতি নিজেদের সম্পদ রক্ষাার জন্য মার্কিন-জাপানীদের নৈতিক সমর্থন প্রদান করে। ঐ সময়ে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল চীনে কেবল ৪টি বৃহৎ আমলা-শাসক পরিবারের সম্পদ ছিল ২০,০০০ মিলিয়ন ডলার। মার্কিন মুখপাত্র হ্যারি ট্রুম্যান বলেন যে, চিয়াং, মাদাম চিয়াং, সোং ও খোং পরিবারকে তাদের পক্ষে রাখার জন্য তারা এ অর্থ প্রদান করেছিল। 

এভাবে পশ্চিমা দেশগুলো ও জাপানীদের অবৈধ অর্থ প্রদানের কারণে আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদী ফটকাবাজ, মধ্যসত্বভোগী ও দুর্নীতিপরায়ণ সরকারি আমলাগোষ্ঠী সৃষ্টি হয় চীনে, যেমনটি হয়েছিল পাকিসত্মানে। ‘‘কুওমিনতাঙ’’ বাহিনীকে অর্থ ছাড়াও জাপান-মার্কিন বাহিনী নানাভাবে অস্ত্র প্রদান করে। ‘‘কুওমিনতাঙ’’ বাহিনীর চিয়াং মার্কিন ট্যাঙ্ক লাভ করে (চীনা স্বাধীনতার পর তাইওয়ান দখল করে) ও তা ব্যবহারে হাজারো চীনা নারী-পুরুষ হত্যা করে। ‘‘কুওমিনতাঙ’’ সিক্রেট সার্ভিসের গুপ্ত ঘাতকরা (আমাদের আল-বদর, আল-সামস) শব্দহীন পিসত্মল লাভ করে ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, মুক্তবুদ্ধির চীনাদের হত্যা করে (আমাদের বুদ্ধিজীবী হ্যা)। কিন্তু চীনাদের দেশপ্রেমের ভূমিধ্বসকারী আন্দোলনে (আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তুলনীয়) প্রচুর মার্কিন-জাপানী অস্ত্র হাতেও ‘‘কুওমিনতাঙ’’ বাহিনী রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতার শিকার হয়। ১৯৪৮ সনে চীনা লালফৌজ তথা মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে উত্তরপূর্ব চীনে ৪,৭২,০০০ ‘‘কুওমিনতাঙ’’ বাহিনীর সদস্য নিহত হয়। এ অবস্থায় মার্কিন ‘ট্রম্যান’ চীনকে ওয়াশিংটনের আক্রমনের জন্য জাতিসংঘে প্রসত্মাব তোলার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন (একাত্তরের বাংলাদেশ-পাকিসত্মান যুদ্ধ স্মরণীয়)। লালফৌজের আক্রমনে শানতাং প্রদেশে হুয়াইহাই সামরিক অভিযানে ৫,৫৫,০০০ ‘‘কুওমিনতাঙ’’ সৈন্য পরাজিত বা নিহত হয়।   

শেষ মুহূর্তে মার্কিনিরা উর্ধতন সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে অগণিত ডলার বিতরণ শুরু করে। মার্কিন মার্শাল পল হফম্যান সাংহাই-এ ‘‘চীনাদের রক্ষার সাহায্যের প্রসত্মাব’’ দেন, যাতে বলা হয় গণফৌজ (লালফৌজ) অগ্রযাত্রা স্থগিত রাখবে এবং চিয়াং ও অন্যান্য মার্কিন দালালদের হত্যা করবে না। চীনা আমলারা এ প্রসত্মাব সমর্থন করলেও, গণফৌজ দৃঢ়চিত্তে সামনে এগিয়ে যায়। চূড়ান্ত এ যুদ্ধে ৮০-লাখ ‘‘কুওমিনতাঙ’’ সৈন্যকে পরাজিত/হত্যা করে ৫৪,০০০ গোলন্দার উপকরণ, ৩১৯,০০০ মেশিনগান লালফৌজ বাহিনী দখল করে। অবশেষে কূলকিনারা না পেয়ে ১৯৪৯ সালে মার্কিনিরা তাদের দূত ও তাদের চীনা বন্ধু চিয়াং-কে মার্কিন পরিবহণে তাইওয়ানে নিরাপদে প্রেরণ করে। ১৯৪৯ সনের ১ অক্টোবর চীন স্বাধীনতা লাভ করে। রাজতন্ত্র, আমলতান্ত্রিক পুঁজিতন্ত্রের বদলে কৃষক-শ্রমিকের মৈত্রী ও নেতৃত্বে সামাজিক অর্থনৈতিক বিপস্নব শুরু হয়। এরপরও চিয়াং তাইওয়ান থেকে মার্কিন সরবরাহকৃত বিমানে সাংহাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা অব্যাহত রাখে (যেমন স্বাধীনতার পর গোলাম আযম পূর্ব পাকিসত্মান পুনরুদ্ধার করতে চেয়েছিল) কিন্তু বিদ্যুৎ বন্ধের পরও চীনারা অন্ধকারে নিমজ্জিত না হয়ে দৃঢ় মনোবল নিয়ে সামনে এগিয়ে যায় ও নয়া চীন গড়ার দৃপ্ত শপথে সামনে এগুতে থাকে।

মুক্তির ৩-বছর পর ১৯৫২ সনে চীন তার ভূমি সংস্কারে হাত দেয়। ১৯৫৬ সনে তারা কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যে ব্যাপক সংস্কার করে জনমালিকানা প্রদান করে। চীন তার শতাব্দী প্রাচীন দুর্ভিক্ষ, জরা পীড়িত, লুণ্ঠন, গৃহযুদ্ধ, অশিক্ষা, দুর্নীতি ইত্যাদি নেতিবাচক অভিধাগুলো পেছনে ফেলে সামনে এগুচ্ছে প্রচ-তর গতিতে। স্বাধীনতার প্রাক্কালে চীন ঘরের খুঁটি আমদানী করতো বৃটেন থেকে, কলমের নিব জার্মানী থেকে, ম্যাচ সুইডেন থেকে, পেট্রোলিয়াম রয়েল ডাচ কোম্পানী থেকে। দেশে তখন একটিও মোটরগাড়ি উৎপাদিত হতো না, দেশের ৯০% মানুষের তথা কৃষকের মূল যন্ত্র ছিল কাঠের লাঙল। কিন্তু এখন চীনের দিকে তাকালে আমরা কি দেখি? পৃথিবীর ২য় বৃহত্তর শক্তিধর দেশ এখন চীন (১ম আমেরিকা)। দ্রুত অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে চীনের স্থান ২য়। সেনাসদস্য সংখ্যা ও ক্ষমতার দিকে চীনের অবস্থান বিশ্বে ১ম। চীন এখন রপ্তানী বাণিজ্যে জাপানসহ বিশ্বের সকল দেশকে পেছনে ফেলে এগিয়ে এসেছে সামনে। বহু বছর ধরে চীন দেশী ও বিদেশী ঋণমুক্ত একটি দেশ। চীনের কোন ঘাঁটি নেই বিদেশে কিংবা সৈন্য নেই অন্য দেশে। চীন তাদের অপছন্দনীয় শাসককে হত্যার ষড়যন্ত্র করেনা। আফিম যুদ্ধ শেষ করে এখন তারা যুদ্ধে নেমেছে তাদের দেশ গড়ার, তার পদচিহ্ন এখন চীনের গ্রাম-শহর, রাসত্মা-ঘাট তথা পরতে পরতে দিপ্যমান। বর্তমানে চীন উন্নতিতে এক অপ্রতিরোধ্য ঐতিহাসিক প্রবণতার ভেতরে হাঁটছে এবং দৌঁড়াচ্ছে। মনে হচ্ছে তাদের এ দৃঢ় বৈজ্ঞানিক বিশ্বাসকে সামান্যতম নাড়াতে পারবে না বিশ্বের কেউ। বিশ্বের অনেক দেশ এখন নতুন সমাজ নির্মাণে নতুন উদ্যমের জন্য চীনের দিকে তাকায় ঈর্ষা আর ভয় নিয়ে। কম আমদানী আর অত্যধিক রপ্তানীতে চীন কাঁপিয়ে দিয়েছে খোদ মার্কিন-জাপানীদেরকে।       
        
সাম্রাজ্যবাদীদের শোষণ, স্বাধীনতার বিপক্ষে দাঁড়ানো চীনাদের একটি অংশ তথা চীনের ইতিহাস যেন আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসেরই অংশ। দুটো দেশই তার মুক্তির জন্য লড়াই করেছে চরম মূল্য দিয়ে। কিন্তু পার্থক্য হচ্ছে, স্বাধীনতার পর চীনের সকল নাগরিক এগিয়ে যাচ্ছে দেশপ্রেমের পতাকা হাতে দৃঢ়চিত্তে। আর আমরা হাবুডুবু খাচ্ছি হরতাল, ভাঙচুর, আর বিশবব্যাংক কেন ঋণ দিচ্ছে না পদ্মা সেতুতে। ইসলাম প্রধান দেশটিতে হিন্দুর সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পেলেও, আশ্চর্যজনভাবে গঠন করছি ‘‘হেফাজতে ইসলাম’’ নামে নতুন সংগঠন, আর তারা ঢালাওভাবে লাখ-লাখ আসিত্মককে ‘‘নাসিত্মক’’ বলে যাচ্ছে বিরতিহীনভাবে। কঠোর পরিশ্রম করে, প্রতারণাকে পরিত্যাগ, কম খেয়ে একটা জাতি তার পরবর্তী প্রজন্মকে কিভাবে এগিয়ে নিতে পারে কাঙিক্ষত স্বর্ণ সোপানে, তার উজ্জ্বল উদাহরণ চীন। আমাদের নেতৃত্ব ও জনগণের চোখ কি খুলবে না এ দেশটির উন্নতির জন্য? আমরা কি শিখতে পারিনা চীনাদের কাছ থেকে তাদের দেশপ্রেম আর সামাজিক ন্যায্যতার যৌক্তিক সূত্রগুলো? নিজের জন্য না হোক, অন্তত আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের সুনির্মল ভবিষ্যত নিশ্চিতকরণে অনুসরণ আর অনুরণীয় হতে পারে চীনাদের রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক দার্শনিকতার সংগ্রামশীলতার তত্ত্ব আর তথ্য ! 

লেখক : ফ্রি-ল্যান্স প্রাবন্ধিক ও সমাজ গবেষক

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন