শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

চা দোকানি কিষাণ দাসকে শ্রদ্ধা আর ভালবাসা ! # ৭৬

 
 
ভারতের এলাহাবাদ জজকোর্টের কেসটি ছিল 'এমরান'কে নিয়ে। যার মাতা পিতা হিসেবে দাবী করছেন জরিনা আর জাভেদ শেখ। পালক পিতা চা দোকানি 'কিষাণ দাস' তাকে ৮ বছর আগে একটি পার্কে কুড়িয়ে পেয়ে তার নাম 'এমরান' জেনে মুসলিম রীতিতে তাকে মানুষ করতে থাকে নিজ হিন্দু পরিবারে। ৮ বছর পর প্রকৃত মা বাবা দাবীদার এমরান ও কিষাণ দাস থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে অবশেষে কোর্টের দারস্থ হয়েছেন। সব শুনে জজ সাহেব 'ডিএনএ' টেস্ট করালেন সবার, তা ম্যাচ করার পর সার্বিক মানবিকতা, জাভেদ শেখের মদাসক্তি বিবেচনা করে এমরান ঐ মুসলিম দম্পতির সন্তান প্রমাণ হওয়ার পরও, আদালত তাকে পালকপিতা কিষাণ দাসের সাথে থাকার রায় দিল।
 
উল্লখ্য যে, অনেক আগে কিষাণ দাসকে একটি মুসলিম পরিবার একইভাবে পেয়ে হিন্দু হওয়ার কারণে মুসলিম পরিবারে হিন্দু রীতিতে বড় করে, যে কারণে কিষাণ দাসের মধ্যে ধর্মান্ধতার চেয়ে মানবিকতার রূপটি বড় হয়ে দেখা যায়, যার প্রতিফলন ঘটে এমরানের ক্ষেত্রে ১০০%।

বায়োলজিক্যাল পিতামাতা হয়েও এমরানকে না পেয়ে জাভেদ আর জরিনা শেখ এমরানকে পাওয়ার জন্য ইউপি হাইকোর্টে আপিল করে। এখানেও মানবিকতার জয় ঘোষণা করে হাইকোর্ট। রায় না পেয়ে জাভেদ শেখ মৃত্যুবরণ করে। জরিনা শেখ এখন ভারতের সুপ্রিম কোর্টে শেষ আপীল দায়ের করেছেন ছেলে এমরানকে ফিরে পেতে। কিন্তু ছেলে থাকতে চায় পালকপিতা কিষাণ দাসের কাছেই।

এ হচ্ছে সম্প্রতি ভারতীয় কোন এক চ্যানেলে প্রদর্শিত সত্য নিয়ে নির্মিত একটা অনুষ্ঠান। ধর্ম আর জন্মের চেয়ে মানবিকতার যে রূপ ঘটনাটিতে বর্ণিত হয়েছে, তা আবারো "সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপর নাই" ধ্বনিকে প্রজ্জ্বলিত রেখেছে ১০০ কোটির ভারতীয় সমাজে। এমন বোধকে শ্রদ্ধা না জানালে মানবিকতা লাঞ্ছিত হবে, তাই স্যালুট চা দোকানি কিষাণ দাসকে সমুজ্জল মানবিকতার জন্যে, ধর্মান্ধতামুক্ত চিন্তনের জন্যে !

ছবি :
কিষাণ দাস ও এমরান


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন