শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

শ্রমের মর্যাদা’ রচনা মুখস্ত করেও হলাম শ্রমবিমুখ : ওরা ভার্সাস আমরা : ৬৪

আমরা এদেশীয় বাঙালিরা চায়ের আড্ডা ছাড়াও, নানা গানে, কবিতায়, গল্পে, নাটকে আমাদের নানা অহংবোধের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর উন্নততর সাংস্কৃতিক চেতনার কথা তুলে ধরে আত্মতৃপ্তির চেষ্টা করি। এদেশের রবীন্দ্রনাথ, বঙ্গবন্ধু আমাদের পরিচিতি অনেক ‘উচ্চ-মার্গে’ নিয়ে গেলেও, তা কি আমরা ধরে রাখতে পেরেছি? আজ স্বদেশে এবং বিদেশে কেউই বাঙালিকে খুব একটা ভাল চোখে দেখে না। আমাদের অর্থনৈতিক দারিদ্র্যতা ছাড়াও এখনকার বাঙালির ‘নৈতিক দারিদ্র্যতা’ এখন ‘দ্রব-সত্য’। গ্লোবাল বিশ্বে কোন কিছুই এখন আর রেখে-ঢেকে করার উপায় নেই। আধুনিক বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের মননজাত ‘উইকিলিকসের’ কল্যাণে আমরাও যেমন জেনে যাচ্ছি ওদের কথা, ওরাও জানছে আমাদের হাড়ির খবর। কিন্তু জানাজানির এ পর্বে যারা বাইরে গিয়ে স্বচেক্ষে ওদের চলমানতা, কর্মস্পৃহা, সচেতনতা দেখেছে; তারা সহজেই তুলনা করতে পারবেন আমাদের আর ওদের মানসিকতা ও কার্যধারার সঙ্গে। ঘটনাক্রমে বর্তমান লেখকের সুযোগ হয়েছিল, আধুনিক উন্নত বিশ্বের কয়েকটি দেশ ভ্রমন করার। পাঠক হয়তো ওদের আর আমাদের তুলনামূলক তথ্যচিত্র জেনে কিছুটা আনন্দ, আশ্চর্য এবং মর্মাহত হবেন, ‘ওরা আর আমরা’ পাঠে।
 
নিউজিল্যান্ডের রাস্তায় এক বিকেলে ফুটপাথ ধরে হাঁটার সময় বিপরীত দিক থেকে এক বৃদ্ধা আসছিলেন বিকটাকৃতির ‘বুল-ডগ’ হাতে ধরে। ‘রাক্ষুসে-মুখো’ বুল-ডগের ভয়ে লেখক ফুটপাথ ছেড়ে রাস্তায় নেমে হাটতেই, বৃদ্ধা তার সঙ্গী ভয়ংকর ‘কুকুর’কে বার বার ‘নিরাপদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করা ছাড়াও, আমার অহেতুক ভয় পাওয়ার জন্যে বার বার ‘সরি’ বলছিলেন। আমাদের কথা চিন্তা করলাম মনে মনে। এ ক্ষেত্রে এদেশে কারো পালিত কুকুরে পথচারীকে কামলাড়েও সম্ভবত কুকুরের মালিক পথচারীকেই উল্টো ‘ধমক’ দিয়ে বলতেন, ‘কুকুর বোবা জিনিস তা দেখে হাঁটতে পারেন না’? অল্প দিনের প্রশিক্ষণে যাওয়া নিউজিল্যান্ডের ডাকঘরে গিয়েছিলাম দেশে বোনকে একটি ‘পোস্টার’ পাঠাবো বলে। ডাকঘরে সাজানো উন্নতমানের ‘সেলভ এডেসিভ’ সমৃদ্ধ বিভিন্ন সাইজের খাম। বিনামূল্যে রাখা বড় একটি ‘এ-৪’ সাইজের খাম হাতে নিয়ে যেইনা তার মধ্যে ভাঁজ করে পোস্টারটি ঢুকাতে যাচ্ছি, তড়িৎ গতিতে কাউন্টারের মহিলা জানতে চাইলো, তিনি কিভাবে আমাকে হেলপ করতে পারেন? বাংলাদেশে পোস্টারটি পাঠাবো জানালে, মহিলা পোস্টারটি নিয়ে ভেতরে গেলেন এবং মোটা শক্ত কাগজে বানানো গোলাকৃতির বক্স নিয়ে এলেন ‘পোস্টার পাঠানো বিশেষ গোলাকৃতি বক্স’ হিসেবে ব্যবহারের জন্যে। ভেতরে গোল করে পোস্টারটি ঢোকালেন, কসটেপ দিয়ে মুখ বন্ধ করলেন, ঠিকানা লেখার জন্যে স্টিকার দিলেন, তা বক্সে লাগালেন এবং বক্সটি পোস্ট করে রশিদ দেয়ার সময় এবং খুচরো পয়সা ফেরত দেয়ার সময় ২-বারই ‘ধন্যবাদ’ জানালেন। পোস্ট অফিসের বর্ণিত আচরণ পেয়ে তুলনা করলাম আমাদের জাতীয় ডাকঘর ‘জিপিও’র সঙ্গে। একটি খাম-কাগজতো দূরের কথা, হাতে বানানো ‘ময়দা-গ্লু’ খোঁজার জন্যে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয় এখানে সেখানে। জিপিওর কোন কর্মচারীকেই কোন তথ্য জিজ্ঞেস করে ‘খুব ভাল জবাব’ কেউ পেয়েছে বলে এখনো জানতে পারিনি। তাচ্ছিল্যের সঙ্গে ২-১ জনে কথা বললেও, অধিকাংশরা কোন কথাই বলেনা স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে।

উন্নত দেশ বাদ দিলেও সড়কপথে ভুটানে যাওয়ার সময় বাংলাদেশ ও ভারত উভয় ইমিগ্রেশনকে সিল মারার জন্যে টাকা দিতে হয়েছিল। ‘জয়গাঁ’র ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন অফিসার প্রতি পাসপোর্টে সিল দেয়ার জন্যে প্রকাশ্যে ১০০ টাকা করে চাইলেন, না হলে দেরী হবে এবং তখন ভুটান বর্ডার বন্ধ হয়ে যাবে বলেও ‘হুমকি’ দিলেন। তাড়াতাড়ি ২-জনের পাসপোর্টের জন্যে ২০০ টাকা বের করে দিতেই, বাংলাদেশী টাকার কারণে আরো ১০০ টাকা চেয়ে নিলেন। অফিস বন্ধের মিনিট দশেক থাকতে ভুটানের অফিসারের হাতে পাসপোর্ট দিতেই তিনি ভিসা লাগানোর জন্যে ফরম ফিলাপ ও পাসপোর্টের ফটোকপি দিতে বললেন। কিন্তু ফটোকপি করতে আবার ইন্ডিয়ার ভেতরে যেতে হবে এবং ফরম ফিলাপ করতেও একটু সময় দরকার বলাতে, ভুটানের ভেতরে থেকেই পরেরদিন সকল কাজ সম্পাদনের পরামর্শ দিলেন। পরদিন অফিস সময়ের আগেই বর্ণিত কাগজপত্র নিয়ে ভুটানী ইমিগ্রেশনে দাঁড়ালাম। গতকালকের অফিসারের বদলে নতুন মুখ এলো অফিস খোলার ১৫-মিনিট আগেই। এসেই জানালার ফাঁক দিয়ে আমাদের পাসপোর্ট হাতে নিলেন, ভিসা ইস্যু করলেন, ফেরত দিলেন ৫-মিনিটের মধ্যে। যদিও তখনও অফিস খোলার আরো ১০ মিনিট বাকি। আমাদের অনুরোধে ভিসা ইস্যুর তারিখও দিলেন আগের দিনের। কোন ফি বা বখশিসই চাইলেন না। আর আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোতে কর্মকর্তারা এসে বসতে, চা খেতে, পেপার দেখতে ও ক্যাশে বসতে ৩০-৪০ মিনিট চলে যায় এমনিতেই। ৮০০ রুপি চুক্তিতে ভাড়া করা ভুটানী টেক্সি ড্রাইভার আমাদের ৪-জনকে রাজধানীতে নিয়ে যাওয়ার পথে আমাদের অনুরোধে ঝরণা, হাইড্রো ইলেকট্রিক প্রজেক্ট, কমলা ও আপেলের বাগানে নেমে দেখালেন। পথিমধ্যে ‘লাঞ্চ’ করার সময় ড্রাইভারকে খেতে অনুরোধ করলেও, সে তার নিজের খরচে আলাদা লাঞ্চ সারলেন। ট্যাক্সি স্টান্ডের পরে প্রায় ২-কিলোমিটার অতিরিক্ত দূরে আমাদের হোটেলে নামিয়ে দিলেন, লাগেজ হোটেল লবিতে পৌঁছে দিলেও অতিরিক্ত কোন ‘টিপস’ বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখান করলেন। তাকে ‘পরের দিন নিয়ে সারাদিন ঘুরতে চাই’ বলাতে সে জানালো যে, তাকে নিলে সারাদিনের জন্যে ৮০০ টাকা দিতে হবে কিন্তু তার বদলে ‘সিটি-ট্যাক্সি’ নিলে আমরা ৫০০ টাকায়ই কাজটি করতে পারবো, তাই তাকে নিয়ে ৩০০ টাকা বেশী দেব কেন?

২০০৬ সনে ইংল্যান্ডে প্রশিক্ষণকালে আমাদের সহযাত্রী জনৈক ব্যক্তির পোশাক ‘আলেম’ প্রকৃতির হওয়াতে ট্যাক্সিটি আমাদের না নিয়েই দ্রুত চলে যায়। উপস্থিত পুলিশকে ঘটনাটি জানালে, পুলিশ বিশেষ স্থানে ফোন করে ট্যাক্সিটি ডেকে আনে। ঘটনার জন্যে ড্রাইভার আমাদের কাছে ক্ষমা চান এবং গন্তব্যে পৌঁছে দেন। বৃষ্টি শুরু হলে ড্রাইভার ৪-যাত্রীর সবাইকে ছাতা ধরে পর্যায়ক্রমে ঘরে পৌঁছে দেয় এবং পেছনে রক্ষিত শপিং ব্যাগগুলো নিজে আমাদের ঘরে পৌঁছায়। মিটারে ওঠা টাকার অতিরিক্ত খুচরা পয়সা সে আমাদের ফিরিয়ে দেয় এবং ধন্যবাদ জানায়। আর নিজের দেশের ট্যাক্সি/সিএনজি নির্দিষ্ট গন্তব্যে বা মিটারে না যেতে চাইলে ফোন করে কোনদিন কোন পুলিশের সাহায্য পাইনি, নিকটে দাঁড়ানো পুলিশের সাহায্য চাইলে ব্যস্ততার কথা বলে পুলিশ দায়িত্ব এড়িয়ে গেছেন। একবার রাস্তায় দাঁড়ানো র্যা বের সাহায্য চাইলে তাদের জবাব, ‘কাজটি তাদের নয় ট্রাফিকের’। এক্ষেত্রে নিজের দেশের ভাড়া করা কার/টেক্সি ড্রাইভারদের আচরণ, মিটারের অতিরিক্ত ‘বখশিস বাণিজ্যের’ কথা লিখে আর পাঠকদের মনকষ্ট দিতে ইচ্ছে করছে না।

চীনের রাস্তায় সাধারণত কোন কুলি থাকে না। বছর দশেক আগে ‘নিংবো সেন্ট্রাল রেল স্টেশনে’ ঢুকে দেখি আমার সিটটি পড়েছে দোতলা ট্রেনের উপরে। সঙ্গে থাকা বিরাটাকৃতির লাগেজটির চাকা থাকার কারণে সহজে টেনে নিয়ে আসতে পারলেও, কিভাবে দোতলা ট্রেনে উঠাবো স্টেশনে দাঁড়িয়ে চিন্তা করছিলাম আর উপরের দিকে তাকাচ্ছিলাম। জানালা দিয়ে একটি মেয়ে বার বার ‘ম্যান্ডারিন’ ভাষায় আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও, আমি তার কথা বুঝতে পারছিলাম না। বার কয়েক ব্যর্থ চেষ্টা করে মেয়েটি আমার কোন জবাব না পেয়ে নিচে নেমে এসে চাইনিজ ভাষায় লেখা আমার টিকেট দেখলো এবং বোঝালো যে, উপরেই আমার সিট। সে সাহায্যের জন্যে আমার লাগেছে হাত লাগালো এবং আমাকে অন্য সাইট ধরতে বললো। অনেক কষ্টে সে ও আমি লাগেজ উপরে তুললে, সে আমার সিট দেখালো এবং সারা পথে আমার খোঁজখবর নিল ‘ভাষা জটিলতা সত্বেও’। এ ক্ষেত্রে ঢাকা সদরঘাটে লঞ্চ থেকে নামার সময় একবার কুলি না পাওয়াতে পাশের কেবিনের সহযাত্রীকে সামান্য ‘হেল্প’-এর প্রস্তাব দেয়াতে, তার অবজ্ঞাসূচক ‘বিকৃত মুখোভঙ্গী’ এতোবছর পরও আমার ষ্পষ্ট মনে আছে।

শ্রমের মর্যাদা সম্পর্কে অনেক রচনা ছাত্রাবস্থায় লিখলেও তার বাস্তবতা দেখে এসেছি ‘তাইওয়ানে’। সম্ভবত ২০০৭ সনের ঘটনা। একটি ঝাড়বাতির ফ্যাক্টরীতে ছিলাম ১০-কন্টিনার শিপমেন্টের শেষ দিনে। ক্রেতা হিসেবে আমার সামনেই কন্টিনার ‘সিলগালা’ করা হবে বিধায় ফ্যাক্টরীতে নিজেই উপস্থিত ছিলাম। ঘটনাক্রমে দিনটি ছিল রবিবার মানে ছুটির দিন। মালিক নিজে বিশ্বখ্যাত ‘রোলস-রয়েস’ গাড়ি ড্রাইভ করে আমাকে নিয়ে গেলেন শহরতলীর ফ্যাক্টরীতে। ফ্যাক্টরীর বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিকের অনুরোধেও ছুটির দিন বিধায় মাত্র ৫-জন শ্রমিক কন্টিনার লোডের কাজে উপস্থিত ছিল। শ্রমিকের স্বল্পতাহেতু আমাকে অবাক করে দিয়ে মালিক নিজে তার ‘কোট-টাই’ খুলে কন্টিনার লোডের কাজে হাত লাগান। ঘন্টা খানেক বাদে ‘মার্সিডিস’ চালিয়ে এলেন মালিকের ‘চাইনিজ স্ত্রী’। তিনি আমার সঙ্গে পরিচয় করলেন, ফ্যাক্টরীতে গিয়ে নিজহাতে কফি বানালেন, আমাকে ও মালিককে দিলেন ও নিজেও খেলেন। জ্যাকেট খুলে হ্যাঙ্গারে ঝুলালেন এবং আমাকে বিস্ময়ের ঘোরে নিয়ে গিয়ে নিজে ‘ফর্ক-লিফট’ নামক মাল তোলার গাড়ি চালিয়ে এক সঙ্গে ২০-কার্টুন করে মাল কন্টিনারে তুলে দিতে লাগলেন। মালিক ও সাধারণ শ্রমিকরা তার উঠানো মাল গাড়ি থেকে কন্টিনারে নিতে থাকলেন। একটি গরিব অথচ শ্রম-বিমুখ দেশের মানুষ হয়ে এই লেখক ‘শ্রম-শ্রদ্ধায়’ বড় হওয়া ‘তাইপে’ শহরের এক কোটিপতি শিক্ষিত দম্পতির সাধারণ শ্রমিকের সঙ্গে একসাথে কাজ করার ‘অভাবনীয় দৃশ্য’ চেয়ে চেয়ে দেখলো সারাদিন। ওদের কাজের প্রতি মমত্ববোধ দেখে আমার চোখে জল এল। ফ্যাক্টরীপতির ‘হটস্ হ্যাপেন’ জিজ্ঞাসায় জবাব দিতে পারিনি এ জন্যে যে, কেন একটি শ্রমবিমুখ ভোগবাদী সমাজে অসম প্রতিযোগিতার কারণে আমাদের দেশটি ক্রমান্বয়ে অধপতিত হচ্ছে!

বলতে পারিনি আমাদের অফিসগুলোতে কোন কারণে পিওন অনুপস্থিত থাকলে ‘বড় করণিক’ ফটোকপি করতে যেমন লজ্জাবোধ করে, তেমনি করণিকের উপস্থিতহীনতায় ‘সাহেব’ কোন নোট লেখা বা ফাইল টাইপ করাকেও অবমাননাকর ভাবতে শিখেছে। উপরে বর্ণিত উদাহরণ আরো হাজারো দেয়া যেতে পারে কিন্তু তাতে কোন লাভ হবেনা, যদি না আমরা আমাদের ‘চেতনাগত দৈন্যতা’ থেকে বেড়িয়ে আসতে না পারি। দরিদ্র মানুষেরা নানাভাবে তাদের দারিদ্র্যকে জয় করতেও পারে কখনো কখনো কিন্তু ‘চিন্তন ও মননের দৈন্যতা’ দূর করার জন্যে দরকার ‘রাষ্ট্রীয় প্রয়াস’ তথা শিক্ষা। সেটি আমরা কবে অর্জন করবো এবং কখন ‘তাইপে’র কোটিপতি দম্পতির মত নিজেরা শ্রমিকের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে পারবো? যখন পিওন বা করণিক অনুপস্থিত থাকলেও, কর্মকর্তা নিজেই টাইপ বা ফটোকপির কাজটি সারতে পারবেন হীনমন্যতাবোধ ছাড়াই! অনেক দিন আগের বিদেশের উপর্যুক্ত ঘটনাগুলো এখনো আমার পুরণো স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করছে এ প্রত্যাশায় যে, আমরা কবে ছোট বেলায় পড়া ‘শ্রমের মর্যাদা’ রচনা-টি নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করতে শিখবো বর্ণিত চীন ও তাইপের লোকদের মত?


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন